সহদেব বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কবিতা
শুধু দুজন
প্রতিটা শুরুর আগে
আরও একটা শুরু থাকে -
তেমনই শেষের সীমানা থেকে
শুরু হয় আরেকটা সীমানা,
কোনটা কে ধরবো শুরু -
লুকোচুরি করে এসে পড়া
বাসন্তীর সকালের আলো,
না শীতের শেষ বেলায়
মনখারাপ করা -
হঠাৎ নেমে আসা সন্ধ্যা রঙ!
বহুরুপী ভালোবাসা -
একেক রূপে সে ছেড়ে গেছে
তার অলীক স্বপ্নের ডালি -
নিঃস্ব করে শুধু নির্বাক শূণ্যতা
সব মিথ্যা - সত্য শুধু একাকিত্ব!
বহতা ফল্গুনদী সত্যিই কি পূর্ণ
না বইতে থাকে -
একমুখী কষ্টের অসীম নীবিড়তায়!
যখন অবিশ্বাসের
জ্বালায় জ্বলে বুক -
যেন হাজার মোম
একসঙ্গে পোড়ে!
ভেঙে পড়ে
হাজার তলার তাসের বাড়ি
ধোঁয়াটে মেঘে
একটা তারা একাই শুধু জ্বলে!
একলা দুজন যখন নেমে আসি
একটা খোলা আকাশ বুকে নিয়ে,
হাজার জোনাক ঝরে পড়ে
তোমার আঙুল বেয়ে -
আমরা শুধু দুজনইতো আছি
আমরা দুজন, দুজন শুধু আছি!
কেমন ছিল একটা শুরুর
আগের শুরুর দিন,
কেমন ছিল সীমানাতে পা ফেলে
আরেক অসীম অতল খোঁজা -
আমরা শুধু দুজনইতো জানি
আমরা দুজন, দুজন শুধু জানি!
অন্য রূপ
মাটি যেন থাকে পায়ের নীচে
আর মাথার ওপর -
একটুকরো খোলা সে আকাশ!
রূপের রঙ বদলায়
সময়ের সাথে
ঠিক যেন ঋতু আসে
জীবনের পরতে পরতে!
সে রূপ যদি এসে মেশে
কোনো অমানিশী রাতের
মধ্য সাগরের সবুজ ঘাসের দ্বীপে -
যেখানে ফেলে এসেছো তুমি
তোমার উন্মুক্ত আঁচলের
শেষ রেখাপাত সেদিন -
যেদিন জ্বেলেছিলে আগুন
বক্ষের আদিম রিপুর উৎসে
তোমার চোখের উদ্ধত দৃষ্টি দংশনে!
অকাল বসন্তে সে দ্বীপে
বোধন দেখেছিল জ্যোৎস্না
জলে নিজের ছায়ার
নীবিড় উষ্ণ আলিঙ্গনে!
ছায়াবৃতা! তুমিতো ছিলেনা অনাবৃতা
সৃষ্টির উৎসমুখে ঝরণা
আবার স্নান করেছিল -
ভাস্করের প্রথম কিরণে,
ইতিহাস আবার ফিরে দেখেছিল
লাজবতী পৃথার রক্তিম আভা,
চোখে চোখে সবুজ দ্বীপে
আলোর ঝর্ণা গেঁথেছিল
চন্দ্রিমার বোবা ভালোবাসা।
সহদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা
এখনও কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্যটি করুন!